বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হলো ধান চাষ, এবং শীতকালীন বোরো মৌসুম (নভেম্বর থেকে এপ্রিল) এতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই মৌসুমে ধানের বীজতলা তৈরি করা হয় চারা উৎপাদনের জন্য, যা পরে মূল খেতে রোপণ করা হয়। কিন্তু শীতের তীব্র ঠান্ডা, কুয়াশা এবং শিশিরের কারণে বীজতলায় নানা সমস্যা দেখা দেয়—যেমন চারা হলুদ বা সাদা হয়ে যাওয়া, বৃদ্ধি থেমে যাওয়া, পাতা শুকিয়ে যাওয়া বা রোগের আক্রমণ। এসব সমস্যা যদি সময়মতো
নারিকেল গাছের গন্ডার পোকা / গোবরে পোকা (Coconut Rhinoceros Beetle) হলো এক ধরনের বড় গুবরে পোকা, যা গাছের কচি কুঁড়ি বা মাথায় আক্রমণ করে গাছের ভেতরে সুড়ঙ্গ তৈরি করে। এর ফলে গাছের নতুন পাতা গজানো বন্ধ হয়, ফলন কমে যায় এবং শেষ পর্যন্ত গাছ মরে যায়। এই পোকার আক্রমণ সাধারণত বর্ষা থেকে শীত মৌসুমে বেশি দেখা যায়। প্রতিরোধের জন্য বাগান পরিষ্কার রাখা।
ধানক্ষেতে ইঁদুর দমনে কার্যকর তিনটি ওষধ হলো থিমিড, সেমকাপ/ফরচুনেট ও র্যাটোনিল। থিমিড ইঁদুর, পোকা ও ছত্রাক দমন করে; সেমকাপ ও ফরচুনেটের তীব্র গন্ধে ইঁদুর পালায়; আর র্যাটোনিল বিষযুক্ত টোপ, যা ইঁদুরকে মেরে ফেলে। সঠিক নিয়মে প্রয়োগ করলে ধানক্ষেত ইঁদুরমুক্ত রাখা যায়।
কলা চাষের ক্ষেতে সঠিক সময়ে সঠিক মতো সার ও বালাইনাশক প্রয়োগ না করলে সঠিক ফলন পাওয়া যাই না, অনেক সময় কলার ফলন বাড়াতে বা আগামিতে নতুন করে অন্য চাষ করার জন্য জমি থেকে দ্রুত কলা উঠানোর প্রয়োজন হয়। এই পরিস্থিতে যত দ্রুত সম্ভব কম সময়ের অনেকেই দ্রুত কলা মোটা তাজাকরণ পদ্ধতি খোজেন যাতে তারা তাদের জমির কলাগুলি খুব দ্রুত বাজারে বিক্রি জমি খালি করতে পারেন।
উলালা ৫০ ডব্লিউডিজি হলো একটি উন্নতমানের সিস্টেমিক ও পত্রভেদী (ট্রান্সলেমিনার) কীটনাশক, যা অ্যান্টি-ফিডিং ক্রিয়ার মাধ্যমে রসচোষা পোকাদের দ্রুত খাওয়ার ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। উলালা কীটনাশকের সক্রিয় উপাদান হলো ফ্লোনিকামিড (Flonicamid 50%), যা বিশেষভাবে শোষক শ্রেণীর পোকা যেমন: সাদা মাছি, এফিড, জেসিড, থ্রিপস, বাদামি গাছ ফড়িং (BPH, WBPH) এবং অন্যান্য হপার দমনে কার্যকর।
ধানের কারেন্ট পোকা / বাদামি গাছ ফড়িং (BPH) ধানের গোড়ায় দলবদ্ধভাবে রস চুষে গাছ দুর্বল করে দেয়। আক্রমণ বাড়লে ৩–৫ দিনে পুরো ক্ষেত শুকিয়ে যায়। এরা স্যাতস্যেতে জমি ও অতিরিক্ত ইউরিয়া ব্যবহারকৃত ধানে বেশি আক্রমণ করে। প্রতিরোধে জমি শুকনো রাখা, সুষম সার প্রয়োগ, ঘন রোপণ এড়িয়ে চলা জরুরি। গুরুতর আক্রমণে ইমিডাক্লোপ্রিড, নিটেনপাইরাম, পাইমেট্রোজিন বা ট্রাইফ্লুমেজোপাইরিম কার্যকর কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
আম গাছে হরমোন বা প্যাকলোবিউট্রাজল প্রয়োগে গাছের অতিরিক্ত বৃদ্ধি কমে গিয়ে শক্তি ফুল ও ফলে সঞ্চিত হয়। এতে প্রতি বছর নিয়মিত মুকুল আসে, ফলন বাড়ে, ফল হয় আকারে বড়, মিষ্টি ও পুষ্টিকর। সঠিক সময় ও ডোজ মেনে জুলাই-আগস্ট মাসে প্রয়োগ করলে গাছ সুস্থ থাকে ও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার গাছের ক্ষতি করতে পারে, তাই সতর্কভাবে ব্যবহার করুন।
পেয়ারা গাছে প্যাকলোবিউট্রাজল নামক হরমোন ব্যবহার করলে গাছের অতি বৃদ্ধি কমে, ডালপালা ঘন হয় ও শেকড় মজবুত হয়। এতে গাছের শক্তি ফুল ও ফলে সঞ্চিত হয়, ফলে নিয়মিত মুকুল আসে, ফলনের পরিমাণ ও গুণমান বাড়ে। তবে নির্দিষ্ট মাত্রায় ব্যবহার জরুরি, না হলে গাছের ক্ষতি হতে পারে। বছরে একবার বর্ষার শেষে গাছ থেকে কিছুটা দূরে মাটিতে প্রয়োগ করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।
শিম গাছে ফুল ঝরে যাওয়া ও ফল না ধরার প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত বৃষ্টি ও সূর্যের আলো স্বল্পতা, অতিরিক্ত গরম ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহার। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন টানা বৃষ্টি বা আলো কম পাওয়া, তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির বেশি হলে কিংবা জমিতে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার ও উচ্চ মাত্রার কীটনাশক প্রয়োগ করলে ফুল ঝরে যায়। এর সমাধান হলো জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, নিয়মিত সেচ দেওয়া এবং সার