নারিকেল গাছের গন্ডার পোকা / গোবরে পোকা (Coconut Rhinoceros Beetle) হলো এক ধরনের বড় গুবরে পোকা, যা গাছের কচি কুঁড়ি বা মাথায় আক্রমণ করে গাছের ভেতরে সুড়ঙ্গ তৈরি করে। এর ফলে গাছের নতুন পাতা গজানো বন্ধ হয়, ফলন কমে যায় এবং শেষ পর্যন্ত গাছ মরে যায়। এই পোকার আক্রমণ সাধারণত বর্ষা থেকে শীত মৌসুমে বেশি দেখা যায়। প্রতিরোধের জন্য বাগান পরিষ্কার রাখা।
বিছা পোকা বা শুয়ো পোকা ফসল ও চারাগাছের বড় ক্ষতি করে। এরা রাতের বেলা কচি ডগা, পাতা কেটে গাছ দুর্বল করে দেয়। কিছু প্রজাতির লোম/কাটা মানুষের ত্বকে অ্যালার্জি ও জ্বালা তৈরি করে। দমন করতে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (মেসি ১০ ইসি, টাইপার ১০ ইসি, সাইপেরিন ১০ ইসি) কার্যকর। সঠিক ডোজে স্প্রে করলে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হয় ও ফসল সুরক্ষিত থাকে।
ধানের কারেন্ট পোকা / বাদামি গাছ ফড়িং (BPH) ধানের গোড়ায় দলবদ্ধভাবে রস চুষে গাছ দুর্বল করে দেয়। আক্রমণ বাড়লে ৩–৫ দিনে পুরো ক্ষেত শুকিয়ে যায়। এরা স্যাতস্যেতে জমি ও অতিরিক্ত ইউরিয়া ব্যবহারকৃত ধানে বেশি আক্রমণ করে। প্রতিরোধে জমি শুকনো রাখা, সুষম সার প্রয়োগ, ঘন রোপণ এড়িয়ে চলা জরুরি। গুরুতর আক্রমণে ইমিডাক্লোপ্রিড, নিটেনপাইরাম, পাইমেট্রোজিন বা ট্রাইফ্লুমেজোপাইরিম কার্যকর কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
আম গাছে হরমোন বা প্যাকলোবিউট্রাজল প্রয়োগে গাছের অতিরিক্ত বৃদ্ধি কমে গিয়ে শক্তি ফুল ও ফলে সঞ্চিত হয়। এতে প্রতি বছর নিয়মিত মুকুল আসে, ফলন বাড়ে, ফল হয় আকারে বড়, মিষ্টি ও পুষ্টিকর। সঠিক সময় ও ডোজ মেনে জুলাই-আগস্ট মাসে প্রয়োগ করলে গাছ সুস্থ থাকে ও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার গাছের ক্ষতি করতে পারে, তাই সতর্কভাবে ব্যবহার করুন।
পেয়ারা গাছে প্যাকলোবিউট্রাজল নামক হরমোন ব্যবহার করলে গাছের অতি বৃদ্ধি কমে, ডালপালা ঘন হয় ও শেকড় মজবুত হয়। এতে গাছের শক্তি ফুল ও ফলে সঞ্চিত হয়, ফলে নিয়মিত মুকুল আসে, ফলনের পরিমাণ ও গুণমান বাড়ে। তবে নির্দিষ্ট মাত্রায় ব্যবহার জরুরি, না হলে গাছের ক্ষতি হতে পারে। বছরে একবার বর্ষার শেষে গাছ থেকে কিছুটা দূরে মাটিতে প্রয়োগ করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।